Posts

জম-কলি প্রভাব, গ্রন্থালোচনা

Image
পুনঃ প্রেম প্রচারিতে হইল মনন। সে কারণ হ’ল যশোমন্তের নন্দন।। যদি বল গৌরাঙ্গের প্রেম তুচ্ছ নয়। সে প্রেম শোষিবে কেন কলির মায়ায়।। তার সাক্ষী ভাগবতে আছয় প্রমাণ। রাজা পরীক্ষিত স্নান করিবারে যান।। বৃষরূপে ছিল ধর্ম দাঁড়িয়ে তখন। মুদ্গর লইয়া কলি ভেঙ্গেছে চরণ।। হেনকালে বসুমতি সুরভী রূপেতে। কেঁদে কেঁদে কহে ডেকে রাজা পরীক্ষিতে।। অই কলি অই ধর্ম এই আমি ক্ষিতি। রক্ষা কর বিপদে ধার্মিক নরপতি।। কলিকে ধরিয়া রাজা চাহিল কাঁটিতে। শরণ লইল কলি প্রাণের ভয়েতে।। রাজা বলে না রহিবি মম অধিকারে। চারি স্থান চাহি নিল কলি পরিহারে।। স্বর্ণকার দোকান অপর বেশ্যালয়। সুরাপান জীব হত্যা যে যে খানে হয়।। চারিঠাঁই পেয়ে কলি পাইল আহ্লাদ। ভাবে সর্বঠাঁই হ’ল আমার প্রসাদ।। বেশ্যালয় যায় কেহ করে সুরাপান। যদি কোন মহাজন সে পথে না যান।। ব্যাসের কলম সাক্ষী বেশ্যা বলি কারে। পঞ্চসঙ্গ করে নারী বেশ্যা বলি তারে।। অনেকেই জীব হত্যা করিছে সদায়। মৎস্য মৃগ পক্ষী সেকি জীব মধ্যে নয়।। ধনবান হলে যাবে স্বর্ণকার ঠাঁই। দোকান স্পর্শিলে কলি তাহা কি এড়াই।। ইহাতেও কেহ যদি না ভুলে মায়ায়। রসিকের ধর্ম দিয়া অনেকে মজায়।। তার সাক্ষী শ্রীগৌরাঙ্গ ধর্ম যবে দিল...

শ্লোক

Image
অশ্বমেধগবালম্বে সন্ন্যাসপলপৈতৃকম। দেবরেণ সুতোৎপত্তি কলৌ পঞ্চ বিবর্জিতম্।। পয়ার । মাধুর্যের মধ্যে নাই সন্ন্যাসের ধর্ম। সন্ন্যাসীর ন্যাসযোগে ঐশ্বর্যের কর্ম।। অকামনা শুদ্ধ প্রেম সভক্তি আশ্রয়। দিবে জীবে আচরিবে তাহা কই হয়।। ভক্ত পক্ষে সন্ন্যাস ঘৃণিত অকারণ। তার লেশ বেশ কেন করিলি ধারণ।। ব্রহ্মত্ব সাধুজ্য মুক্তি কৃষ্ণভক্তে দণ্ড। হরিনামে পাপ ক্ষয় কহে কোন ভণ্ড।। মুক্তিশ্রেষ্ঠ ব্যাখ্যে যারা ভক্তি নাহি চিনে। হরিনামে পাপ ক্ষয় তারা ইহা মানে।। মুক্তিকে যে তুচ্ছ করে ভক্তি করে সার। পুণ্যকে না দেয় স্থান পাপ কোন ছার।। হরিনামে প্রেমপ্রাপ্ত সাধুদের বাণী। প্রেমরূপা আহ্লাদিনী রাধাঠাকুরানী।। যেই নাম সেই হরি শ্রীমুখের বাক্য। জীবে কেন মনে প্রাণে নাহি করে ঐক্য।। নাম সুপ্রসন্ন হ’লে আহ্লাদিনী পাই। বিশুদ্ধ পীরিতি ব্যাখ্যা আর বাক্য নাই।। শুদ্ধ মানুষেতে আর্ত্তি নৈষ্ঠিক ভজন। তার কিসে গয়া কাশী আর বৃন্দাবন।। বেহালের বেশ মাত্র দণ্ড যে ধারণ। জ্ঞানমিশ্রা ভক্তি এত আইল এখন।। এত বাহ্য কহে যেই তার কেন দণ্ড। এ কারণ নিত্যানন্দ দণ্ড কৈল খণ্ড।। অন্তরে উল্লাস প্রভু বাহ্যে খেদান্বিত। নিত্যানন্দ প্রেমে প্রভু হইল প্রতীত।। এইভাব মহাপ্র...

অথ দণ্ডভঙ্গ- বিবরণ

Image
অথ দণ্ডভঙ্গ- বিবরণ এবে শুন দন্ডভঙ্গ নিগূঢ় কারণ। দন্ড ভাঙ্গা ঘাট এবে আছে নিরূপণ।। ভারতীকে কৈলা গুরু কাটোয়ায় আসি। শ্রীগৌরাঙ্গরূপে প্রভু হইল সন্ন্যাসী।। দন্ড কমণ্ডলু করে কটিত কপীন। সন্ন্যাসী হইল পরে অতি দীন হীন।। আর ত নিগূঢ় এক দেখত ভাবিয়া। নিত্যানন্দ দন্ড ভাঙ্গে কিসের লাগিয়া।। কেহ কহে নিত্যানন্দ পরম উদার। সে কারণ দণ্ড খণ্ড করিল তাঁহার।। কেহ বলে মহাপ্রভু সকল ত্যাজিল। সব ত্যাজি কেন এই দন্ডটি রাখিল।। তাহে ক্রোধ করি নিত্যানন্দ ভাঙ্গে দণ্ড। কেহ কহে ছল করি ভুলায় ব্রহ্মান্ড।। ভাগবত লীলামৃতে আছয় প্রকাশ। চলিলেন মহাপ্রভু করিতে সন্ন্যাস।। নিত্যানন্দ দণ্ড প্রতি বলে ওরে দণ্ড। তোরে করি দণ্ড তুই বড়ই পাষণ্ড।। ব্রহ্মা বিষ্ণু শূলিন্দ্র যাঁহার আজ্ঞাকারী। সে কেন বহিবে তোরে হ’য়ে দণ্ডধারী।। অবশ্য ভক্তের বাক্য নহে ব্যভিচারী। এ সব সিদ্ধান্ত আমি শিরোধার্য করি।। স্বয়ং এর কার্য্য এই আছে চিরধার্য্য। এক কার্য্য অবিলম্বে বাড়ে বহু কার্য্য।। দুই তিন অবিলম্বে এক কার্য্য হয়। নিগূঢ় আস্বাদি স্বাভাবিক যে দেখায়।। হেন মানি নিত্যানন্দের অসহ্য হইল। সে কারণ প্রভু দণ্ড খণ্ড যে করিল।। এ জন্য অসহ্য হ’লে নিত্যানন্দের মনে।...

।। পয়ার।।

Image
।। পয়ার।।  কি ধন্য প্রভুর লীলা এই কলিযুগে। সব লীলা হ’তে ধন্য হ’ল ভক্তিযোগে।। দশরথ গৃহে জন্ম লইয়া শ্রীরাম। ভূভার হরণ পূর্ণ ভক্ত মনস্কাম।। বৈকুণ্ঠ নায়ক হরি হৈল লীলাকারি। নন্দের নন্দন কৃষ্ণ গোলোক বিহারী।। ভূভার হরণ ভক্ত মনোরম্য কারী। ভক্তসঙ্গে প্রেমরস মধুর মাধুরী।। তিন শক্তি একত্র হইয়া ভগবান। দেবকীর বায়ুগর্ভে দুই শক্তি যান।। ব্রহ্মবৈবর্ত্তপুরাণে মিমাংসা র’য়েছে। যশোদার গর্ভে মহাবিষ্ণু জন্মিয়াছে।। চারি শক্তি একযোগে হয় কৃষ্ণ লীলা। ভাগবতে শুকদেব মিমাংসা করিলা।। বহুত প্রমাণ লাগে সে সব লিখিতে। অন্যান্য প্রমাণ গ্রন্থে র’য়েছে বলিতে।। চৈতন্যচরিতামৃত তাহার প্রমাণ। বহুযুগ গত পরে এল ভগবান।। নন্দসূত ব’লে যাঁরে ভাগবতে গাই। সেই কৃষ্ণ অবতীর্ণ চৈতন্য গোঁসাই।। বহুত দ্বাপর কলি আসে আর যায়। স্বয়ং এর অবতার তাতে নাহি হয়।। অষ্টাবিংশ মন্বন্তর শেষ যেই কলি। অবতীর্ণ ভক্তবৃন্দ লইয়া সকলি।। যে দ্বাপরে অন্য শক্তি বিবর্জ্জিত হ’য়ে। গোলোকবিহারী লীলা গোকুলে আসিয়ে।। দ্বাপরের শেষ সেই কলির সন্ধ্যায়। শ্রী গৌরাঙ্গরূপে প্রভু জন্ম নদীয়ায়।। এই সেই কলি এই সেই অবতার। অনর্পিত প্রেমভক্তি অর্পিল এবার।। সেই ত গৌরাঙ্গ প্রভ...

পুনর্ব্বার অবতারের প্রয়োজন ও পূর্ব্ব পূর্ব্ব ভাগবত ও পুরাণ প্রসঙ্গ।

Image
              ত্রিপদী। ত্রেতাযুগে সূর্যবংশে,      এক বিষ্ণু চতুরাংশে, হ’ল দশরথের নন্দন। দ্বাপরেতে কারাগারে,       জন্ম বাসুদেব ঘরে, যশোদার হৃদয় রতন।। যোগমায়ার প্রভাবে,     মাতা দেবকীর গর্ভস্রাবে, রোহিণী গর্ভেতে আকর্ষণ। যোগমায়া আকর্ষণে,       জন্মিলেন বৃন্দাবনে, বলরাম নাম সংকর্ষণ।। নন্দের নন্দন যেই,         শচীসুত হ’ল সেই, নিত্যানন্দ হৈল বলরাম। সেই লীলা সম্বরণ,          খেতর জন্ম ধারণ, নিত্যানন্দ হৈল নরোত্তম।। শ্রীঅদ্বৈত রামচন্দ্র,          শ্রীনিবাস গৌরচন্দ্র, তিন প্রভু প্রেম প্রচারিলা। যে জন্যে এ অবতার,       পশ্চাতে করি প্রচার, ওঢ়াকাঁন্দি কৈল শেষ লীলা।। যস্য পুত্র যস্য নাম,        যথা হ’ল জন্মধাম, করিলাম লিখিতে আশায়। রসিক সজ্জন বিজ্ঞ,         দেহ মোরে এই ভাগ্...

অথ মঙ্গলাচরণ।

Image
অথ মঙ্গলাচরণ। হরিচাঁদ চরিত্রসুধা প্রেমের ভাণ্ডার। আদি অন্ত নাহি যার কলিতে প্রচার।। সত্য ত্রেতা দ্বাপরের শেষ হয় কলি। ধন্য কলিযুগ কহে বৈষ্ণব সকলি।। তিন যুগ পরে কলি যুগ এ-কনিষ্ঠ। কনিষ্ঠ হইয়া হৈল সর্ব্বযুগ শ্রেষ্ঠ।। এই কলিকালে শ্রীগৌরাঙ্গ অবতার। বর্ত্তমান ক্ষেত্রে দারুব্রহ্মরূপ আর।। যে যাঁহারে ভক্তি করে সে তার ঈশ্বর। ভক্তিযোগে সেই তার স্বয়ং অবতার।। হয়গ্রীব অবতার কপিলাবতার। অষ্টাবিংশ অবতার পুরাণে প্রচার।। মৎস্য কুর্ম্ম বামন বরাহ নরহরি। ভৃগুরাম রঘুরাম রাম অবতরি।। ঈশ্বরের অংশকলা সব অবতার। প্রথম পুরুষ অবতার রঘুবর।। নন্দের নন্দন হ’ল গোলোকের নাথ। সংকর্ষণ রাম অবতার তাঁর সাথ।। সব ঈশ্বরের অংশ পুরাণে নিরখি। বর্ত্তমান দারুব্রহ্ম অবতার কল্কি।। সব অবতার হ’তে রাম দয়াময়। দারুব্রহ্ম দয়াময় কৃষ্ণ দয়াময়।। পূর্ণব্রহ্ম পূর্ণানন্দ নন্দের নন্দন। সেই নন্দসুত হ’ল শচীর নন্দন।। যে কালে জন্মিল কৃষ্ণ পূর্ণব্রহ্ম নয়। পূর্ণ হ’ল যেকালে পড়িল যমুনায়।। শচীগর্ভে জন্ম ল’য়ে না ছিলেন পূর্ণ। দীক্ষাপ্রাপ্তে পূর্ণ নাম শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য।। তখন হইয়া পূর্ণ সন্ন্যাস করিলে। আটচল্লিশ বর্ষ পরে মিশিলা উৎকলে।। সকল হরণ করে তাঁরে বলি হরি। রাম ...

বন্দনা

Image
শ্রী শ্রী হরি-লীলামৃত আদিখন্ড গ্রন্থারম্ভ ।। প্রথম তরঙ্গ ।।  বন্দনা জয় জয় হরিচাঁদ জয় কৃষ্ণদাস। জয় শ্রীবৈষ্ণব দাস জয় গৌরীদাস।। জয় শ্রীস্বরূপ দাস পঞ্চ সহোদর। পতিত পাবন হেতু হরি অবতার।। জয় জয় গুরুচাঁদ জয় হীরামন। জয় শ্রীগোলোকচন্দ্র জয় শ্রীলোচন।। জয় জয় দশরথ জয় মৃত্যুঞ্জয়। জয় জয় মহানন্দ প্রেমানন্দময়।। জয় নাটু জয় ব্রজ জয় বিশ্বনাথ। নিজ দাস করি মোরে কর আত্মসাৎ।।